Tuesday, January 30, 2018

আসুন মহাবিশ্বকে জানি পর্ব :১

আসুন মহাবিশ্বকে জানি পর্ব :১


       আচ্ছা আমি যদি আপনাকে প্রশ্ন করি, মহাবিশ্ব কি? ভাবছেন তাই না? বলবেন চাঁদ, সূর্য, পৃথিবী এবং অন্যান্য গ্রহ, উপগ্রহ নিয়ে আমাদের মহাবিশ্ব, কিন্তু সত্যিই কি তাই? মহাবিশ্বের অনেক কিছুই আছে যা আমরা কল্পনাই করি নাই। এসব চাঁদ, সূর্য, পৃথিবী এবং অন্যান্য গ্রহ, উপগ্রহ এই মহাবিশ্বের সদস্য মাত্র। মহাবিশ্ব বোঝাতে অল্প কথাতে হবে না, তাই আমি পর্ব করে ভাগে ভাগে মহাবিশ্ব সম্পর্কে জানাব। আশা করি ভাল লাগবে। আমি আজ অল্প কথা মহাবিশ্বের ধারনা দিবো, দয়া করে আমার সম্পূর্ন লেখাটি পড়ুন।

মহাবিশ্ব কী?
আপনাকে যদি প্রশ্ন করা হয় সবচেয়ে বড় জিনিসের উদাহরণ দিতে পারবেন, আপনি কি বলবেন? আপনি কি আপনার দেখা সবচেয়ে বড় দালানের কথা বলবেন? হিমালয় পর্বতের উদাহরন দেবেন? পৃথিবী বা সূর্যের কথা বলবেন? আসলে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন সবচেয়ে বড় হচ্ছে মহাবিশ্ব। চাঁদ, সূর্য, পৃথিবী এবং অন্যান্য গ্রহ, উপগ্রহ, নানা বস্তু নিয়ে আমাদের সৌরজগত। এই বিশাল সৌরজগৎ মহাবিশ্বের একটি সদস্য মাত্র। সূর্যের মত অসংখ্য নক্ষত্র মিলে যে বিশাল একটি সমাবেশ তাকে বলে গ্যালাক্সি। আমাদের সৌরজগৎ যে গ্যালাক্সির সদস্য তাকে আপনারা ছায়াপথ বলে জানেন। আমাদের সূর্য যেমন একটি নক্ষত্র, তেমনি অসংখ্য নক্ষত্র আছে ছায়াপথে। আমরা মহাবিশ্ব কাকে বলব ? বিপুল সংখ্যক গ্যালাক্সি এবং তাদের মধ্যবর্তী স্থান মিলে আমাদের মহাবিশ্ব। মহাবিশ্ব কত বড় জানতে বিজ্ঞানীরা অনেক পরীক্ষা ও পরিমাপ করেছেন।
মহাবিশ্বের কোনো অন্ত এখনো বিজ্ঞানীরা খুজে পাইনাই, তাই মহাবিশ্বের একটা ক্ষুদ্র অংশের ছবি প্রকাশ করা হলো

মহাবিশ্ব সৃষ্টির প্রধান বিষয় হলো “BIG BANG” বা মহাবিস্ফোরণ। আজ এটা সম্পর্কে আমরা আলোচনা করবো।

BIG BANG বা মহাবিস্ফোরণ কী: 
ভৌত বিশ্বতত্ত্বে মহাবিস্ফোরণ তত্ত্ব মহাবিশ্বের উৎপত্তি সম্পর্কে প্রদত্ত একটি বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব। এই তত্ত্বের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো কোন ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার পরিবর্তে একটি বিশেষ মুহূর্তে মহাবিশ্বের উদ্ভব। এই তত্ত্ব বলে আজ থেকে প্রায় 13 . 75 বিলিয়ন বছর পূর্বে এই মহাবিশ্ব একটি অতি ঘন এবং উত্তপ্ত অবস্থা থেকে সৃষ্টি হয়েছিল। বিজ্ঞানী এডুইন হাবল প্রথম বলেন, দূরবর্তী ছায়াপথসমূহের বেগ সামগ্রিকভাবে পর্যালোচনা করলে দেখা যায় এরা পরষ্পর দূরে সরে যাচ্ছে অর্থাৎ মহাবিশ্ব ক্রমশ সম্প্রসারিত হচ্ছে। আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্বের ফ্রিদমান-ল্যমেত্র্‌-রবার্টসন-ওয়াকার মেট্রিক অনুসারে এটি ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এই তত্ত্বসমূহের সাহায্যে অতীত বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সমগ্র মহাবিশ্ব একটি সুপ্রাচীন বিন্দু অবস্থা থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। এই অবস্থায় সকল পদার্থ এবং শক্তি অতি উত্তপ্ত এবং ঘন অবস্থায় ছিল। কিন্তু এ অবস্থার আগে কী ছিল তা নিয়ে পদার্থবিজ্ঞানীদের মধ্যে কোন ঐকমত্য্য নেই। অবশ্য সাধারণ আপেক্ষিকতা এর আগের সময়ের ব্যাখ্যার জন্য মহাকর্ষীয় অদ্বৈত বিন্দু (সিংগুলারিটি) নামক একটি শব্দের প্রস্তাব করেছে।
মহাবিস্ফোরণ শব্দটি স্থূল অর্থে প্রাচীনতম একটি বিন্দুর অতি শক্তিশালী বিস্ফোরণকে বোঝায় যার মাধ্যমে মহাবিশ্বের সৃষ্টি হয়েছিল, আবার অন্যদিকে এই বিস্ফোরণকে কেন্দ্র করে মহাবিশ্বের উৎপত্তি ও গঠন নিয়ে বিশ্বতত্ত্বে যে মতবাদের সৃষ্টি হয়েছে তাকেও বোঝায়। এর মাধ্যমেই মহাবিশ্বের প্রাচীনতম বস্তুসমূহের গঠন সম্পর্কে ব্যাখ্যা পাওয়া যায়, যার জন্য মহাবিস্ফোরণ মতবাদের পরই আলফার-বেটে-গ্যামফ তত্ত্ব প্রণীত হয়েছে। মহাবিস্ফোরণের একটি উল্লেখযোগ্য ফলাফল হল, বর্তমানে মহাবিশ্বের অবস্থা অতীত এবং ভবিষ্যতের অবস্থা থেকে সম্পূর্ণ পৃথক। এই তত্ত্বের মাধ্যমেই ১৯৪৮ সালে জর্জ গ্যামফ অনুমান করতে পেরেছিলেন যে, মহাজাগতিক অণুতরঙ্গ পটভূমি বিকিরণের অস্তিত্ব রয়েছে। ১৯৬০-এর দশকে এটি আবিষ্কৃত হয় এবং স্থির অবস্থা তত্ত্বকে অনেকটাই বাতিল করে মহাবিস্ফোরণ তত্ত্বকে প্রমাণ করতে সমর্থ হয়।
পর্ব ২: ছায়াপথ পরার জন্য আমন্ত্রন রইল...

No comments:

Post a Comment

thanks